ক্যাকটাস ও সাকুল্যান্টের যত্নের বিস্তারিত প্রাথমিক ধারণা
ক্যাকটাসের গল্প-
২০০৪ সালের দিকে ফ্যামিলির সাথে এক নার্সারীতে বেড়াতে গিয়ে, প্রথম চোখে পড়ে ক্যাকটাস । প্রথম দেখাতেই প্রেম যাকে বলে তাই বলতে পারেন । অনেক জিদ করে ২টা কিনে নেই । যদিও এখন গাছগুলা আর নেই । বাসা পাল্টাতে পাল্টাতে হাড়িয়ে ফেলেছি । তবে উৎসাহ কমেনি কখনো । একটু বড় হয়েই পাগলের মত খুজে খুজে কালেক্ট করা শুরু করে দেই । দুঃখের ব্যাপার হল আমি ক্যাকটাসের মাটি সম্পর্কে কিচ্ছুই জানতাম না । ছাইয়ের সাথে এটেল মাটি দিয়ে লাগিয়ে রাখতাম । যার ফলে গাছগুলোও আমাকে ছেড়ে চলে যেত। ধীরে ধীরে নেট ঘেটে দেশি ক্যাকটাসগুলো বাচাতে শিখি । সম্প্রতি রাজশাহীর Bibhuti Bhusan Sarker এর মত গুরু ও উদার মনের মানুষদের সান্নিদ্ধে মোটামুটি একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে ।
যাই হোক আজ আমি আপনাদের সাথে ক্যাকটাস বাচানো ও বেড়ে তোলার কিছু মৈলিক বিষয় ও ভুলগুলো তুলে ধরব । আশা করি আমার চেয়ে বেশি জানলে ভুল ধরে সংশোধন করে দেবেন ।
২০০৪ সালের দিকে ফ্যামিলির সাথে এক নার্সারীতে বেড়াতে গিয়ে, প্রথম চোখে পড়ে ক্যাকটাস । প্রথম দেখাতেই প্রেম যাকে বলে তাই বলতে পারেন । অনেক জিদ করে ২টা কিনে নেই । যদিও এখন গাছগুলা আর নেই । বাসা পাল্টাতে পাল্টাতে হাড়িয়ে ফেলেছি । তবে উৎসাহ কমেনি কখনো । একটু বড় হয়েই পাগলের মত খুজে খুজে কালেক্ট করা শুরু করে দেই । দুঃখের ব্যাপার হল আমি ক্যাকটাসের মাটি সম্পর্কে কিচ্ছুই জানতাম না । ছাইয়ের সাথে এটেল মাটি দিয়ে লাগিয়ে রাখতাম । যার ফলে গাছগুলোও আমাকে ছেড়ে চলে যেত। ধীরে ধীরে নেট ঘেটে দেশি ক্যাকটাসগুলো বাচাতে শিখি । সম্প্রতি রাজশাহীর Bibhuti Bhusan Sarker এর মত গুরু ও উদার মনের মানুষদের সান্নিদ্ধে মোটামুটি একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে ।
যাই হোক আজ আমি আপনাদের সাথে ক্যাকটাস বাচানো ও বেড়ে তোলার কিছু মৈলিক বিষয় ও ভুলগুলো তুলে ধরব । আশা করি আমার চেয়ে বেশি জানলে ভুল ধরে সংশোধন করে দেবেন ।
১। পানিতেই ক্যাকটাসের মৃত্যু । এটা ক্যাকটাসের মূল বিষয় । যদি আপনার গাছটা কম রোদে থাকে তাহলে সপ্তাহে একবার পানি দিন এবং টানা রোদে থাকলে ২ দিন পানি দিন । কখনো গাছের শরীরে পানি দেবেন না । তবে গাছ ময়লা হয়ে গেলে মাসে একবার ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন । শীতে বিকেলে পানি দেওয়া যাবে না গাছে । ভোরে পানি দেওয়ার সেরা সময় ।
তবে হঠাত বৃষ্টিতে বা কোন কারণে মাটিসহ গাছ ভিজে গেলে করণীয়-
প্রথমে সরিয়ে আনুন বৃষ্টি থেকে । দেখুন পানি কি মাটির নীচ পর্যন্ত চলে গেছে । যদি নীচে না যায় তাহলে চিন্তা নেই । আর যদি নীচে যায় তাহলে মাটি সহ খুব আলগা করে গাছটি তুলে ফেলুন । শিকরের যেন কোন ক্ষতি না হয় । ফ্যানের বাতাসে হোক বা যেভাবেই হোক মাটিটা শুকিয়ে ফেলুন । গাছটা ধুয়ে শুকান । অবশ্যই কোন কিছুর তাপ দেবেন না । পুড়ে যাবে গাছ । পরদিন মাটি শুকিয়ে গেলে গাছটি অতি যত্নে পটিং করে ফেলুন। টবের নীচে ফুটো এবং ফুটোর উপর পাথরের টুকরা না ইটের গুড়া দিতে হবে । সাবধানে থাকুন বৃষ্টি থেকে ।
তবে হঠাত বৃষ্টিতে বা কোন কারণে মাটিসহ গাছ ভিজে গেলে করণীয়-
প্রথমে সরিয়ে আনুন বৃষ্টি থেকে । দেখুন পানি কি মাটির নীচ পর্যন্ত চলে গেছে । যদি নীচে না যায় তাহলে চিন্তা নেই । আর যদি নীচে যায় তাহলে মাটি সহ খুব আলগা করে গাছটি তুলে ফেলুন । শিকরের যেন কোন ক্ষতি না হয় । ফ্যানের বাতাসে হোক বা যেভাবেই হোক মাটিটা শুকিয়ে ফেলুন । গাছটা ধুয়ে শুকান । অবশ্যই কোন কিছুর তাপ দেবেন না । পুড়ে যাবে গাছ । পরদিন মাটি শুকিয়ে গেলে গাছটি অতি যত্নে পটিং করে ফেলুন। টবের নীচে ফুটো এবং ফুটোর উপর পাথরের টুকরা না ইটের গুড়া দিতে হবে । সাবধানে থাকুন বৃষ্টি থেকে ।
২। মুন ক্যাকটাস অর্থাৎ রঙিন ক্যাকটাসগুলো আসলে অন্য ক্যাকটাসের মাথায় বসিয়ে গ্রাফট করে রাখা হয় । এগুলো মাটিতে বাঁচে না । এগুলো তীব্র রোদে রাখলে সানবার্ন হয়ে গাছ নষ্ট হয়ে যাবে । তাই বারান্দার হালকা রোদ এর জন্য বেস্ট । ইউটিউবে গ্রাফট করার অনেক ভিডিও আছে (How to graft a cactus) । দেখে শিখে নিতে পারেন । গ্রাফট করার পর অবশ্যই আধা ঘন্টা রোদে রাখবেন। তারপর ১০ দিন ছায়ায় ।
৩। রোদ ক্যাকটাসের ঔষধ । ক্যাকটাসকে রোদে রাখলে এটি ছত্রাকের আক্রমন থেকে সুরক্ষিত থাকে এবং ফুল পাওয়া যায় অনেক বেশি। সাকুল্যান্ট ইন্ডাইরেক্ট রোদে ভাল হয় । সরাসরি রোদে না রাখাই ভাল । তারমানে এই না ঘরে রাখবেন । বারান্দা বা শেড এ রাখতে পারেন ।
৪। ক্যাকটাস ও সাকুল্যান্টের মাটি তৈরি-
🌵ক্যাকটাস- ৫০ ভাগ মোটা দানার হলুদ পাথুরে বালি (ধুয়ে শুকিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল) + ৩০ ভাগ পাতা পচা সার বা পুরাতন শুকনা কালচে গোবর সার + ১০ ভাগ হাড়ের গুড়া + বাকী ১০ ভাগ কাঠকয়লার ছোট ছোট টুকরা দিয়ে দেবেন + ৫-১০ দানা ডিএপি সার + প্রতি টবে হাফ চা চামুচেরও কম ব্যাভিস্টিন (ছত্রাকনাশক, এটার নাম আলাদাও হতে পারে ) ও ফুরাটন (কীটনাশক) গুড়া বিষ দেবেন যাতে ছত্রাক ও পোকামাকড় না হয় মাটিতে । সব সংগ্রহ হলে মিক্স করে ফেলুন । এইতো রেডি । এর সাথে অনেকে পারলাইট, লাভা রক ইত্যাদি দামী উপাদান দেয় । কিন্তু প্রাথমিক লেবেলে এত দামী কিছুর কোন দরকার নেই ।
🍀 সাকুল্যান্ট- ৪০ ভাগ মোটা দানার হলুদ পাথুরে বালি (ধুয়ে শুকিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল) + ৩০ ভাগ পাতা পচা সার বা পুরাতন শুকনা কালচে গোবর সার + ১০ ভাগ হাড়ের গুড়া + ১০ ভাগ পারলাইট দিয়ে দেবেন + ১০ ভাল পুরাতন পচানো কোকোপিট বা কোকোডাস্ট + ৫-১০ দানা ডিএপি সার + প্রতি টবে হাফ চা চামুচেরও কম ব্যাভিস্টিন (ছত্রাকনাশক, এটার নাম আলাদাও হতে পারে ) ও ফুরাটন (কীটনাশক) গুড়া বিষ দেবেন যাতে ছত্রাক ও পোকামাকড় না হয় মাটিতে । সব সংগ্রহ হলে মিক্স করে ফেলুন ।
উপাদানগুলো আপনাকে নিজে খুজে বের করতে হবে । দয়া করে এগুলা কই পাব মেসেজ দেবেন না । যেমন, সার পাবেন সারের দোকানে ।
🌵ক্যাকটাস- ৫০ ভাগ মোটা দানার হলুদ পাথুরে বালি (ধুয়ে শুকিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল) + ৩০ ভাগ পাতা পচা সার বা পুরাতন শুকনা কালচে গোবর সার + ১০ ভাগ হাড়ের গুড়া + বাকী ১০ ভাগ কাঠকয়লার ছোট ছোট টুকরা দিয়ে দেবেন + ৫-১০ দানা ডিএপি সার + প্রতি টবে হাফ চা চামুচেরও কম ব্যাভিস্টিন (ছত্রাকনাশক, এটার নাম আলাদাও হতে পারে ) ও ফুরাটন (কীটনাশক) গুড়া বিষ দেবেন যাতে ছত্রাক ও পোকামাকড় না হয় মাটিতে । সব সংগ্রহ হলে মিক্স করে ফেলুন । এইতো রেডি । এর সাথে অনেকে পারলাইট, লাভা রক ইত্যাদি দামী উপাদান দেয় । কিন্তু প্রাথমিক লেবেলে এত দামী কিছুর কোন দরকার নেই ।
🍀 সাকুল্যান্ট- ৪০ ভাগ মোটা দানার হলুদ পাথুরে বালি (ধুয়ে শুকিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল) + ৩০ ভাগ পাতা পচা সার বা পুরাতন শুকনা কালচে গোবর সার + ১০ ভাগ হাড়ের গুড়া + ১০ ভাগ পারলাইট দিয়ে দেবেন + ১০ ভাল পুরাতন পচানো কোকোপিট বা কোকোডাস্ট + ৫-১০ দানা ডিএপি সার + প্রতি টবে হাফ চা চামুচেরও কম ব্যাভিস্টিন (ছত্রাকনাশক, এটার নাম আলাদাও হতে পারে ) ও ফুরাটন (কীটনাশক) গুড়া বিষ দেবেন যাতে ছত্রাক ও পোকামাকড় না হয় মাটিতে । সব সংগ্রহ হলে মিক্স করে ফেলুন ।
উপাদানগুলো আপনাকে নিজে খুজে বের করতে হবে । দয়া করে এগুলা কই পাব মেসেজ দেবেন না । যেমন, সার পাবেন সারের দোকানে ।
৫। ছত্রাক ক্যাকটাসের মূল শত্রু। ডায়াথেন ৪৫ কিনুন। আধা চা চামুচ গুড়া ২ লিটার পানিতে গুলিয়ে তা সপ্তাহে দুইবার গাছের উপর ও মাটিতে স্প্রে করে দিন। এমনভাবে অল্প স্প্রে করবেন যাতে মনে হয় গাছে শিশির পড়ে আছে। এতে ছত্রাক দূরে থাকবে ।
৬। ছায়ায় বড় হওয়া ক্যাকটাস হঠাৎ করেই তীব্ররোদে দীর্ঘ সময়ের জন্য দেবেন না। এতে গাছ পুড়ে মারা যেতে পারে।
৭। ক্যাকটাস গোড়ায় ছোট্ট নুড়ি পাথর ইউজ করতে পারেন। এগুলো গাছকে দারুন একটা লুক দেয় এবং রোগ জীবাণু থেকে কিছুটা দূরে রাখে । এগুলা গাছকে নীচ থেকে আলোর প্রতিফলন দিতে পারে ।
৮। টবের নিচে অবশ্যই ফুটো থাকতে হবে যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে। টবের নীচের অংশে ফুটোর উপরে ১ ইঞ্চি পাথর বা ইটের দাদাদার গুড়া দেবেন। এতে মাটিগুলো বের হয়ে যেতে পারবে না
৯। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সার ও কীটনাশক দিয়ে ক্যাকটাস ফুলে ফেঁপে তুলে বিক্রি করে। যা বাসায় এনে লাগাতেই অক্কা পায়। কমদামে পেলেই খুশি হয়ে যাবেন না । তাই এসব সেলার থেকে সাবধান থাকুন এবং কৃত্রিম রাসায়নিক সার অতি ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।
১০। ১ নাম্বার পয়েন্ট টা ২বার রিভাইজ দিন। আমরা বাঙালি পানি দিয়ে খুব আনন্দ পাই তো ... বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে গাছে পানি দেওয়া অফ করুন । হাহাহা
আপনি ও আপনার ক্যাকটাসগুলো দীর্ঘজিবী হোক এই কামনায়......
আসিফ ইকবাল ।
আসিফ ইকবাল ।
Comments
Post a Comment