Posts

ক্যাকটাস ও সাকুল্যান্ট কোনটা কেমন স্থানে রাখবেন ?

ক্যাকটাস - পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্ট সহ্য করা গাছ হলো ক্যাকটাস । একে মেরে ফেলার সেরা উপায় হলো বেশি পানি দেওয়া । তাই এটাকে আপনি এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে বৃষ্টির পানি পড়ে না এবং পাশাপাশি অনেক রোদ পায় । অনেকেই বলবে যে ইচ্ছেমত পানিতে রাখুন, যদি সয়েল ঠিক থাকে । এটা করে গাছ মরলে আমাকে দোষ দেবেন না । আমি আগেই মানা করে দিলাম এটা । হ্যা বৃষ্টির পানির রহমতে গাছ তারাতারি বড় হয় । কিন্তু ঠাস করে পচে মরেও যায় । তাই এই লোভে পা দেবেন না । গ্রীন হাউস বানাতে পারলে সেরা । ফিল্টার রোদ মানে কাঁচ, পলিথিন বা স্বচ্ছটিনের মধ্য দিয়ে আসা রোদ এটার জন্য আশির্বাদ । আর অবশ্যই ঘরটি যেন বদ্ধ না হয়, বাতাস যেন প্রবাহিত হয় । এরা 45°F to 85°F তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে । আরেকটা সতর্কতা কখনোই ক্যাকটাস এর উপর গায়ে লাগানো অবস্থায় পলিথিন দিয়ে এটা রোদে দেবেন না । বার্ন হয়ে যাবে । আপনি ক্যাকটাসটিতে যত আলো দিতে পারবেন এর ফুল ধরার সম্ভাবনা ততই বাড়বে এবং শীতে পানি খুব কম দেবেন  । ঘরের মধ্যের গাছ কাকটাস না । আমি আবার বলছি ঘরের মধ্যের গাছ কাকটাস না । দয়া করে আপনার শখ পূরণ করতে গিয়ে চমৎকার এই সৃষ্টিকে মেরে ফেলবেন না । সাকুল্যান্ট - সা...

কিভাবে আপনি একটা গাছ থেকে বনসাই তৈরি করবেন ?

Image
কিভাবে আপনি একটা গাছ থেকে বনসাই তৈরি করবেন ? বনসাই তৈরি করা যেতে পারে ২ ভাবে ।  ১। নতুন চারা থেকে - এটা অনেক সময় সাধ্য , গোড়া মোটা হতে অনেক সময় লাগে । তবে এই পদ্ধতিতে গাছকে নিজের পছন্দমত আকৃতি দেওয়া সহজ ।  ২। পুরাতন মোটা গাছ সংগ্রহ করে - এই পদ্ধতিতে গাছের গোড়া মোটা করা সহজ কিন্তু আকৃতি দেওয়া অনেক কঠিন ।  আমি নতুন চারা থেকে বনসাই করাকেই সমর্থন করি । তাই এই পদ্ধতিই আপনাদের খুব সাধারণ ভাবে শেখাবো ।  ১ । মাটি রেডি করা - এটা সবার আগের কাজ । ৫০% ভাল মানের দোআঁশ মাটি + ৩০% পুরাতন কালো গোবর সার + ১০% হাড়ের গুঁড়ো + ১০% হলদে মোটাবালি । সাথে ১০ দানার মত ডি এ পি সার, কীটনাশন আধা চা চামুচ, ছত্রাকনাশক আধা চা চামচ দিয়ে দেবেন । এবার এই মিশ্রিত মাটি ১ মাস ফেলে রেখে ব্যবহার করতে হবে ।  ২ । পাত্র রেডি করা- অনেকেই ভুলে গুগলে দেখে ছোট ছোট বনসাই পট কিনে । যা সবচেয়ে কমন ভুল । বনসাই শুরু করতে হয় বড় পাত্রে । যখন গাছ সম্পূর্ণ বনসাই হয়ে যায় তখন একে ছোট পাত্রে দিতে হবে । পাত্রের নীচে অবশ্যই ফুটো থাকতে হবে ।  ৩ । গাছ সংগ্রহ- প্রথমে নার্সারী থেকে একটা সুস্থ চারা সংগ্রহ ...

ক্যাকটাসের গোড়া পচে নরম হয়ে গেলে কি করবেন ?

Image
ক্যাকটাসের গোড়া পচে নরম হয়ে গেলে কি করবেন ?  গোড়া যদি বেশি পচে যায় এবং পচন মাথা পর্যন্ত হয়ে যায় তাহলে আর আশা না করাই ভাল । আর যদি শুধু নীচের অংশ পচে যায় তাহলে নীচের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন - ১) প্রথমে যতটুকু পচে গেছে একটা পরিষ্কার ব্লেড অথবা চাকু দিয়ে কেটে ফেলুন । ২) এবার এটার কাটা জায়গায় এলোভেরা, মধু অথবা রুট হরমন লাগিয়ে ৩-৪ দিন একটা শুকনা রোদহীন জায়গায় রেখে দিন । কদিন পর দেখবেন এর কাটা জায়গাটুকু আর নরম নেই । শক্ত হয়ে গেছে । এখন এটি জীবানু থেকে দূরে থাকবে । ৩) এবার মোটাবালি ৯০% ও পাতাসার ১০% এর একটি মাটির মিশ্রণ বানান । এতে গাছটি বসিয়ে দিন । গাছটিতে রোদ ও পানি প্রায় ৭-১০ দিন দেওয়াই যাবেনা । ৭ দিন পর পর তুলে দেখবেন শিকর আসছে কিনা নীচে । শিকর আসলে একে অল্প করে রোদ ও পানিতে অভ্যস্ত করুন । ধীরে ধীরে গাছটি ভাল হয়ে যাবে যদি সৃষ্টিকর্তা চান । লেখা- আসিফ ইকবাল । 

ক্যাকটাস ও সাকুল্যান্টের যত্নের বিস্তারিত প্রাথমিক ধারণা

ক্যাকটাসের গল্প- ২০০৪ সালের দিকে ফ্যামিলির সাথে এক নার্সারীতে বেড়াতে গিয়ে, প্রথম চোখে পড়ে ক্যাকটাস । প্রথম দেখাতেই প্রেম যাকে বলে তাই বলতে পারেন । অনেক জিদ করে ২টা কিনে নেই । যদিও এখন গাছগুলা আর নেই । বাসা পাল্টাতে পাল্টাতে হাড়িয়ে ফেলেছি । তবে উৎসাহ কমেনি কখনো । একটু বড় হয়েই পাগলের মত খুজে খুজে কালেক্ট করা শুরু করে দেই । দুঃখের ব্যাপার হল আমি ক্যাকটাসের মাটি সম্পর্কে কিচ্ছুই জানতাম না । ছাইয়ের সাথে এটেল মাটি দিয়ে লাগিয়ে রাখতাম । যার ফলে গাছগুলোও আমাকে ছেড়ে চলে যেত। ধীরে ধীরে নেট ঘেটে দেশি ক্যাকটাসগুলো বাচাতে শিখি । সম্প্রতি রাজশাহীর  Bibhuti Bhusan Sarker  এর মত গুরু ও উদার মনের মানুষদের সান্নিদ্ধে মোটামুটি একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে । যাই হোক আজ আমি আপনাদের সাথে ক্যাকটাস বাচানো ও বেড়ে তোলার কিছু মৈলিক বিষয় ও ভুলগুলো তুলে ধরব । আশা করি আমার চেয়ে বেশি জানলে ভুল ধরে সংশোধন করে দেবেন । ১। পানিতেই ক্যাকটাসের মৃত্যু । এটা ক্যাকটাসের মূল বিষয় । যদি আপনার গাছটা কম রোদে থাকে তাহলে সপ্তাহে একবার পানি দিন এবং টানা রোদে থাকলে ২ দিন পানি দিন । কখনো গাছের শরীরে পানি দেবেন না । তবে গাছ ময়লা...

কিভাবে বীজ থেকে ক্যাকটাস জার্মিনেট করবেন ?

কিভাবে ক্যাকটাসের বীজ থেকে চারা করবেন – কোনোগাছ বীজ থেকে বড় করাই আসলে প্রকৃত সফলতা ও সুখ । তাই এমন ধৈর্যশীল ও প্রকৃত ক্যাকটাসপ্রেমীদের জন্য আমার এই লেখা । প্রয়োজনীয় উপকরণঃ ১। একটা প্লাস্টিকের কৌটো বা টিফিট বাটি । অবশ্যই এর উপরের ঢাকনা থাকতে হবে এবং তা স্বচ্ছ হবে । পটের নীচে ফুটো থাকতে হবে । ২। ক্যাকটাস সয়েল ( ৬০% বালি, ২০% কোকোপিট, ১০% পারলাইট, ১০% গুড়ো পাতাসার) ৩। ক্যাকটাসের সুস্থ্য বীজ । ৪। কিছু ছোট ছোট নুড়ি পাথর । প্রক্রিয়া – প্রথমের ক্যাকটাস সয়েল খুব ভাল করে জীবাণুমুক্ত করে নিন । এটা ভেজেও নিতে পারেন । গরমে জীবানু ছত্রাক মরে যাবে । এবার যে পটে বীজ জার্মিনেট করবেন সেটিকে ধুয়ে নিন ছত্রাকনাশক দিয়ে । পটের সয়েলের নীচের অংশে নুড়ি পাথর দিন আধা ইঞ্চির মত । এরপর এতে ক্যকটাস সয়েল ঢালুন । হাত দিয়ে মশৃণ করে দিন ।পানির স্প্রে দিয়ে পুরো সয়েল ভিজে পানি দিন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার এই মাটিতে আপনার ক্যাকটাসের বীজ ফেলে দিন। বীজ ফেলা হলে খুব অল্প বালি দিন এর উপর । ক্যাকটাসের বীজের উপর বেশি বালি দিয়ে তা এই বালি ভেদ করে উপরে উঠতে পারবে না । তাই খুব অল্প বালির আবরণ তৈরি করুন । স্প্র...

একটা ক্যাকটাস কিভাবে পটিং করবেন ?

১। গাছটি হাতে পাবার পর ফাংগিসাইড(যেমন- ডায়াথেন) দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলুন শিকরসহ । এটা না পেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । ২। গাছটি শুকিয়ে নিন (রোদে দেবেন না যেন। এমনি ১-২দিন শুকনা জায়গায় রাখলেই হবে) ৩। শুকিয়ে গেলে ক্যাকটাসের মাটিতে লাগিয়ে ফেলুন । মাটি যেন শুকনো থাকে নিশ্চিত হোন । ভেজা মাটিতে গাছ লাগাবেন না । লাগানো হলে মাটির উপরের অংশে নুড়ি পাথর দিন । ৪। লাগানোর পর একে ছাড়ায় রাখুন ২-৩ দিনের মত । পানি দেবেন না গোড়ায়। তারপর একে হালকা রোদে দিন । মাটি শুকনো মনে হলে পানি দেবেন । কখনই ভেজা মাটিতে পানি দেবেন না । গাছ লাগিয়েই সাথে সাথে রোদে দেবেন না । ধীরে ধীরে একে রোদের জন্য অভ্যাস করে নিতে হবে । ১-২-৩-৪ ঘন্টা এভাবে প্রতি সপ্তাহে রোদের পরিমাণ বাড়াবেন । (- ক্যাকটাসে পানি স্প্রে করবেন না । শুধু পরিষ্কার করার সময় স্প্রে করতে পারবেন । করলেও শুকিয়ে নেবেন সাথে সাথেই গায়ে লাগা পানিগুলা)

বৃষ্টিতে বা কোন কারণে মাটিসহ গাছ ভিজে গেলে করণীয়-

বৃষ্টিতে বা কোন কারণে মাটিসহ গাছ ভিজে গেলে করণীয়- প্রথমে সরিয়ে আনুন বৃষ্টি থেকে । দেখুন পানি কি মাটির নীচ পর্যন্ত চলে গেছে । যদি নীচে না যায় তাহলে চিন্তা নেই । আর যদি নীচে যায় তাহলে মাটি সহ খুব আলগা করে গাছটি তুলে ফেলুন । শিকরের যেন কোন ক্ষতি না হয় । ফ্যানের বাতাসে হোক বা যেভাবেই হোক মাটিটা শুকিয়ে ফেলুন । গাছটা ধুয়ে শুকান । অবশ্যই কোন কিছুর তাপ দেবেন না । পুড়ে যাবে গাছ । পরদিন মাটি শুকিয়ে গেলে গাছটি অতি যত্নে পটিং করে ফেলুন। টবের নীচে ফুটো এবং ফুটোর উপর পাথরের টুকরা না ইটের গুড়া দিতে হবে । সাবধানে থাকুন বৃষ্টি থেকে । ( অনেকে গাছ টব সহ ঘরে রেখে দেয় , ফলে স্যাতসেতে হয়ে গিয়ে গাছের গোড়ায় পচন ধরে মরে যায় আদরের গাছটি । শুধু বৃষ্টি নয় অতিরিক্ত পানি দিয়ে ফেললেও এই পদ্ধতিই অবলম্বন করুন ) লেখা- আসিফ ইকবাল ।